কারিগরি শিক্ষায় দূর হবে কর্মসংকট

News Image

Published on 19 Jan, 2025

বাংলাদেশে কর্মসংকট একটি দীর্ঘমেয়াদী চ্যালেঞ্জ, যা দূর করার অন্যতম উপায় হলো কারিগরি শিক্ষার প্রসার। কারিগরি শিক্ষার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা শুধুমাত্র তত্ত্বীয় জ্ঞান নয়, বাস্তবিক দক্ষতাও অর্জন করে। ফলে তারা নিজেদের কর্মসংস্থান নিজেরাই তৈরি করতে সক্ষম হয়।

কারিগরি শিক্ষার বর্তমান উদ্যোগ

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, মাধ্যমিক পর্যায়ে কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। ২০২৪ সাল থেকে মাধ্যমিক, মাদ্রাসা এবং সাধারণ শিক্ষার ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত কারিগরি শিক্ষা দেওয়া হবে। নবম ও দশম শ্রেণিতে অন্তত একটি কারিগরি বিষয় বাধ্যতামূলকভাবে শেখানো হবে।
এ বছরের মধ্যেই ৬৪০টি প্রতিষ্ঠানে কারিগরি শিক্ষা শুরু হয়েছে। এই উদ্যোগ শিক্ষার্থীদের কর্মসংস্থানের জন্য প্রস্তুত করতে সহায়ক হবে।

কারিগরি শিক্ষার উপকারিতা

  1. আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টি: শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন প্রযুক্তিগত দক্ষতা অর্জন করে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ শুরু করতে পারে।
  2. চাকরির সুযোগ বৃদ্ধি: কারিগরি শিক্ষায় দক্ষ কর্মীরা স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক চাকরির বাজারে বেশি চাহিদাসম্পন্ন।
  3. অর্থনৈতিক উন্নয়ন: দক্ষ জনশক্তি রপ্তানি রেমিট্যান্স বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।
  4. বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন: কারিগরি শিক্ষায় তত্ত্বের পাশাপাশি বাস্তব কাজ শেখানো হয়, যা কর্মক্ষেত্রে সরাসরি প্রয়োগযোগ্য।

চ্যালেঞ্জ ও করণীয়

কারিগরি শিক্ষার সাফল্যের পথে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।

  • প্রতিষ্ঠানের অভাব: পর্যাপ্ত সংখ্যক কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই।
  • দক্ষ প্রশিক্ষকের অভাব: প্রশিক্ষিত শিক্ষক ও প্রশিক্ষণ উপকরণের ঘাটতি।
  • উচ্চশিক্ষার সুযোগ সীমিত: কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা উন্নত করতে হবে।
  • সচেতনতার অভাব: অনেক শিক্ষার্থী ও অভিভাবক এখনও কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন নয়।

করণীয়:

  • আরও বেশি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্থাপন।
  • প্রশিক্ষকদের দক্ষতা বাড়াতে বিশেষ প্রশিক্ষণ কার্যক্রম।
  • মানসম্মত সরঞ্জাম ও কাঁচামালের সরবরাহ নিশ্চিত করা।
  • জনসচেতনতা বৃদ্ধি করে কারিগরি শিক্ষার প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা।

উপসংহার

কারিগরি শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ সময়োপযোগী এবং বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। এটি শুধু কর্মসংস্থান সঙ্কট দূর করবে না, বরং দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করতেও সহায়তা করবে। দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলার মাধ্যমে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নিজস্ব অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে পারবে।

← Back to News